আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স.) বলেন, ‘রমজানকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে –
• প্রথম দশদিন আল্লাহর রহমত নাজিলের,
• দ্বিতীয় দশদিন গোনাহ মাফ তথা মাগফিরাতের এবং
• তৃতীয় দশদিন আল্লাহর আজাব থেকে নাজাতের জন্য নির্ধারিত।’
রমজানের রহমতের ১ থেকে ১০ দিন
মাহে রমজানের পবিত্রতা ও মর্যাদা সম্পর্কিত বৈশিষ্ট্য বিবৃত করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজান এমন এক মাস যে মাসের প্রথম দশ দিন রহমতের বারিধারায় পরিপূর্ণ।এই দশদিন আল্লাহর রহমত নাজিল হয়ে থাকে।প্রথম দশ দিনকে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে রহমতের বারিধারা বর্ষণ করে মাগফিরাত ও ক্ষমার উপযোগী করেন।
রমজানের মাগফিরাতের ১১ থেকে ২০ দিন
মাহে রমজানের দ্বিতীয় দশক শুরু হয় যা মাগফিরাত। হাদিস শরিফে উল্লিখিত হয়েছে- ক্ষমা ও মার্জনা প্রার্থনার জন্য রমজানের এই ১০ দিন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গত যে, মাহে রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাতের এবং শেষ ১০ দিন নাজাতের অর্থাৎ দোজখের আগুন তথা যাবতীয় ঐহিক পারত্রিক দাবদাহ বা যন্ত্রণা হতে মুক্তি প্রার্থনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত রমজান মাসে চারটি কাজ গুরুত্বসহকারে করা আবশ্যক। আল্লাহর একত্ব ও তার বান্দা হওয়ার কথা বার বার আন্তরিকতার সঙ্গে স্বীকার ও ঘোষণা করা অর্থাৎ কলেমা তৈয়েবা ও কলেমা শাহাদাত বেশি বেশি পাঠ করা, তার কাছে ক্ষমা ও মাগফিরাতের প্রার্থনা করা।
রমজানের নাজাতের ২১ থেকে ৩০ দিন
রমজানের তৃতীয় দশক নাজাতের। তৃতীয় দশকে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে বান্দার জন্য নাজাতের ফায়সালা করেন। হাদিস শরিফে এই দশককে ‘ইতক্বুম মিনান নার’ বা জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশক বলা হয়েছে। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন রমজানের শেষ ১০ রাত আসত, তখন নবী করিম (সা.) কোমরে কাপড় বেঁধে নেমে পড়তেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত জেগে থাকতেন। আর পরিবার-পরিজনকেও তিনি জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ১০৫৩)
তাই রমজানের মুক্তির অবারিত সুযোগ পেয়েও যারা নিজেদের মুক্ত করে নিতে পারল না, তাদের চেয়ে হতভাগা আর কে?